
স্টাফ রিপোর্টার :
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি পিছিয়েছে। আগামী ২৮শে নভেম্বর বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ ব্যাপারে শুনানি হবে। গতকাল প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ এ দিন ঠিক করেন। আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, খন্দকার মাহবুব হোসেন, জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল প্রমুখ। অপরদিকে, দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নুুল আবেদীন বলেন, হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আমরা আবেদন করেছিলাম। চেম্বার আদালত সেটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। সোমবার আবেদনটি শুনানির জন্য তালিকায় থাকলেও আপিল বিভাগের সকল বিচারপতিকে নিয়ে শুনানি করবেন জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বৃহস্পতিবার দিন ঠিক করেন।
খালেদা জিয়া এতই অসুস্থ যে তার অ্যাডভান্স চিকিৎসা দরকার। মানবিক কারণে তিনি জামিন পাবেন এই প্রত্যাশা আমরা করি।
প্রসঙ্গত, গত ৩০শে এপ্রিল জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে অর্থদণ্ড স্থগিত এবং সম্পত্তি জব্দের ওপর স্থিতাবস্থা দিয়ে দুই মাসের মধ্যে ওই মামলার নথি তলব করেছিলেন আদালত। এরপর ২০শে জুন বিচারিক আদালত থেকে মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। গত বছরের ১৮ই নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করা হয়। হাইকোর্ট খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করে দেয়। এর বিরুদ্ধে তিনি আবেদন করেন। এর আগে ২০১৮ সালের ২৯শে অক্টোবর পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের সাত নম্বর কক্ষে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেন।
মানহানির দুই মামলায় বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়ার অন্তবর্তীকালীন জামিনের মেয়াদ এক বছর করে বাড়িয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন, সুপ্রিমকোর্টের জ্যৈষ্ঠ আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। আদেশের পর কায়সার কামাল বলেন, এর আগে হাইকোর্ট খালেদা জিয়াকে দুই মামলায় ছয় মাস করে জামিন দিয়েছিলেন। মেয়াদ শেষ হওয়ায় ফের আবেদন করলে আদালত তার দুই মামলায় জামিন এক বছর করে বাড়িয়েছেন।
এর আগে গত ১৮ই জুন মানহানির এই দুই মামলায় খালেদা জিয়াকে ছয় মাসের অন্তবর্তীকালীন জামিন দেয় হাইকোর্ট। গতকাল মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেন খালেদার আইনজীবীরা। কিন্তু আদালত এক বছর জামিনের মেয়াদ বাড়ান। ২০১৪ সালের ২১শে অক্টোবর জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ওই বছরের ১৪ই অক্টোবর বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া বলেছেন, আওয়ামী লীগ ধর্ম নিরপেক্ষতার মুখোশ পরে আছে। আসলে দলটি ধর্মহীনতায় বিশ্বাসী। আওয়ামী লীগের কাছে কোনো ধর্মের মানুষ নিরাপদ নয়। এ বি সিদ্দিকী ২০১৭ সালের ২৫শে জানুয়ারি আরেকটি মানহানির মামলায় অভিযোগ করেন, শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগকে নিয়ে ২০১৬ সালের ৩১শে ডিসেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে কটুক্তি করেছেন খালেদা জিয়া।