
সিএনবাংলাদেশ অনলাইন :
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বহরে রয়েছে বোয়িং থেকে সরাসরি কেনা ১০টি সর্বাধুনিক প্রযুক্তির উড়োজাহাজ। এর বাইরে লিজ চুক্তিতে আনা হয়েছে চারটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ও দুটি ড্যাশ-৮ কিউ ৪০০ উড়োজাহাজ। চলতি মাসেই যুক্ত হচ্ছে সদ্য কেনা আরো দুটি ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার। পর্যাপ্ত রুট না থাকায় বিদ্যমান উড়োজাহাজগুলোর পূর্ণ ব্যবহার সম্ভব না হলেও হজ ফ্লাইট পরিচালনার অজুহাতে আরো দুটি বড় আকারের উড়োজাহাজ লিজ নেয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত উড়োজাহাজ সংস্থাটি।
জানা গেছে, দুটি উড়োজাহাজ লিজ নিতে গত ২৪ সেপ্টেম্বর দরপত্র আহ্বান করে বিমান। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নীতিমালা অনুযায়ী বরাবরের মতোই দরপত্রে অংশগ্রহণকারী সংস্থাগুলোর জন্য উড়োজাহাজের বয়সসীমা বেঁধে দেয়া হয় সর্বোচ্চ ২০ বছর। দরপত্র ঘোষণার পর বেশ কয়েকটি সংস্থা উড়োজাহাজ লিজ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে। কিন্তু দরপত্র জমার সময় শেষ হওয়ার সাতদিন আগে হঠাৎ করে সেটি বাতিল ঘোষণা দিয়ে নতুন করে দরপত্র আহ্বান করে সংস্থাটি। নতুন দরপত্রে উড়োজাহাজের বয়সসীমার শর্ত ২০ বছর পরিবর্তন করে ১২ বছর করা হয়। এতে স্বাভাবিকভাবেই দরপত্রে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা কমে যায়। একই সঙ্গে উড়োজাহাজের বয়সসীমা কমানোর ফলে লিজের খরচও স্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিমানকে দুটি উড়োজাহাজ লিজ দিতে এরই মধ্যে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে মালিন্দ এয়ার। তবে দরপত্রে অংশগ্রহণের সময় মালিন্দ এয়ার তিন বছরের জন্য লিজ মূল্য না দিয়ে কেবল ২০২০ সাল অর্থাৎ এক বছরের জন্য মূল্য দেখিয়েছে। দরপত্র প্রস্তাবনায় সংস্থাটি ২০২১ ও ২০২২ সালের জন্য কোনো দর উল্লেখ করেনি। ভবিষ্যতে মৌখিক আলোচনার মাধ্যমে বাজারদর অনুযায়ী পুনরায় মূল্য নির্ধারণ করার প্রস্তাব দিয়েছে সংস্থাটি, যা পিপিআরের নিয়মের মধ্যে পড়ে না।
এ বিষয়ে বিমান বালাদেশ এয়ারলাইনসের জনসংযোগ বিভাগে যোগাযোগ করা হলে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে বিমানের পরিকল্পনা বিভাগের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিডিউলে পরিবর্তন এনে নতুন যে শর্ত যোগ করা হয়েছে, তাতে গত বছরের চেয়ে ঘণ্টায় ৭৫০ ডলার বিমানকে বেশি দিতে হবে। ফলে তিন বছরে বিমানকে অতিরিক্ত ৪০ কোটি টাকা বেশি ব্যয় করতে হবে।
উল্লেখ্য, মিসরের ইজিপ্টএয়ার থেকে পাঁচ বছরের চুক্তিতে ড্রাই লিজে দুটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর উড়োজাহাজ সংগ্রহ করে বিমান। এর মধ্যে একটি উড়োজাহাজ (রেজিস্ট্রেশন নম্বর এস২-এএইসএল, কনস্ট্রাকশন নং ৩২৬৩০) ২০১৪ সালের মার্চে বিমানবহরে যু্ক্ত হয়। অপর উড়োজাহাজটি (রেজিস্ট্রেশন নম্বর এস২-এএইসকে, কনস্ট্রাকশন নং ৩২৬২৯) যুক্ত হয় একই বছর মে মাসে। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে উড়োজাহাজ দুটি দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করা সম্ভব না হলেও বিমানকে প্রতি মাসে ১০ কোটি টাকা করে গচ্চা দিতে হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে দীর্ঘ চেষ্টার পর গত অক্টোবরে বিমানের বহর থেকে বিদায় করা সম্ভব হয় লিজে আনা উড়োজাহাজ দুটি। বহরে থাকা ত্রুটিপূর্ণ এ উড়োজাহাজ দুটির জন্য বিমানের লোকসান হয়েছে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা।