
ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধা প্রতিনিধি/
দেশের খ্যাতিমান ছড়াকার ও সাংবাদিক মুকতিহরণ সরকারের ২৫তম স্বরণসভা তার জন্মস্থান গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার কামারপাড়া ইউনিয়নের ধনকুঠি গ্রামে দিনভর নানা সাংস্কৃতিক আয়োজন করা হয়। নয়-দশকে তাঁর হাতে গড়া কামারপাড়া উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও মুকতি হরণ সরকার স্মৃতি পরিষদ এসব আয়োজন করে।
আজ রবিবার দুপুরে বিদ্যালয় মিলনায়তনে তাঁর স্মরণ সভায় কামারপাড়া পিএম শিক্ষক মো. আজিজার রহমানের সভাপতিত্বে স্মৃতিচারণ করেন কামার পাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু তাহের মো. আব্দুস সামাদ, ব্যাংক কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম পাভেল, সাদুল্লাপুর গার্লস কলেজের অধ্যাপক হোসনে আরা, শিক্ষক রণজিত সরকার, অশোক সরকার, লিটন সরকার, প্রাক্তন ছাত্রী শ্যামলী রানী সরকারসহ অন্যরা।
আলোচকরা বলেন, পুরুষানুক্রমিক পান্ডিত্যেরই উত্তরাধিকার পেয়েছিলেন তিঁনি। লেখক হিসেবে সারা দেশ জুড়ে পরিচিতি পেলেও তিনি অর্থবিত্তের পথে ছটেন নি। নিজের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা না থাকলেও এই জনপদের মানুষের কল্যাণে কাজ করাটাকেই জীবনের ব্রত হিসেবে মনে করেন। পাশাপাশি উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে গান তথা সংস্কৃতির মাধ্যমে অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। এলাকার কিশোর তরুণ তরুণীদের প্রগতিশীল জীবনবোধের দীক্ষা দেন। নারী শিক্ষার প্রসারের জন্য তিল তিল করে গড়ে তোলেন কামাল পাড়া উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। তিনি নাম মাত্র বেতনে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ গ্রহন করেন। সেই বিদ্যালয়টি আজ এই এলাকার নারী শিক্ষার বাতিঘর হিসেবে পরিচিত।
আলোচনা সভা শেষে মুকতি হরণ সরকারের লেখা গান, কবিতা, ছড়ায় তাকে নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা হয়। এতে স্থানীয় শিল্পী, কবী ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা অংশ নেন।
মুকতিহরণ সরকার গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার ধনকুঠি গ্রামে ১৯৪৮ সালে ১৬ আগস্ট জন্মেছিলেন। তিনি শিক্ষকতা বিষয়ক ডিগ্রী ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮০ সালে সাংবাদিকতায় এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৯৭ সালের ২২ মে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
তার মৃত্যু দিবস উপলক্ষে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রীদের উদ্যোগে “মুকতিহরণ সরকারের নির্বাচিত ছড়া ও কবিতা” নামে ৬ ফর্মার একটি সুদীশ্য পুস্তিকা প্রকাশিত হয়েছে।