সৌদিতে ধরপাকড় অভিযানের পর ২১৫ জন প্রবাসী বাংলাদেশে



প্রবাস ডেস্ক :

সৌদি আরব সরকারের ধরপাকড় অভিযানে দুটি ফ্লাইটে করে এক রাতেই দেশে ফিরলেন আরও ২১৫ জন বাংলাদেশি। গত বুধবার রাত সোয়া ১১টার দিকে সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান ৮৬ জন এবং রাত দেড়টার দিকে একই এয়ারলাইন্সের অন্য একটি ফ্লাইটে করে দেশে ফিরেন আরও ১২৯ জন। সব মিলে এক রাতেই ফিরলেন ২১৫ জন বাংলাদেশি শ্রমিক।

বরাবরের মতো ফেরত আসাদের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে খাবার-পানিসহ নিরাপদে বাড়ি পৌছানোর জন্য জরুরি সহায়তা প্রদান করা হয়।

এ যাত্রায় ফিরে আসাদের মধ্যে একজন হলেন ইলিয়াস আলী। বাড়ি সিলেটের গোপালগঞ্জে। তিনি জানান, সন্তানদের লেখাপড়া ও সংসারে সুখ আনতে বছর দুয়েক আগে ধারদেনা করে প্রায় চার লাখ টাকা দিয়ে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন।

ইলিয়াস আলী আরও বলেন, ‘দালাল তাকে বলেছিল, সেখানে ভালো কাজ দেওয়া হবে অথচ আমি তা পাইনি। যে কোম্পানিতে কাজ করার কথা ছিল তাদের দেখা মেলেনি। ফলে এখানে সেখানে কাজ করেছি। আকামা হয়নি। আকামার জন্য দুই দফায় টাকা দিয়েছি ২১ হাজার রিয়াল। এরই মধ্যে মাস ছয়েক আগে ডান পা অবশ হয়ে গেল। চলাফেরা করতে পারি না। যে জায়গায় কাজ করি সেই কফিল বললেন, “আকামা করতে ২৭ হাজার রিয়াল লাগবে।” এই পা নিয়ে আমি এখানে থেকে কি করব। পরে ধরা দেই। শেষমেষ খালি হাতেই আমাকে ফিরতে হলো দেশে।’

সৌদি থেকে ফেরত আসাদের মধ্যে বেশির ভাগের চোখে মুখে ছিল হতাশার ছাপ। যেন সকল দুঃখ-কষ্ট ফুটে উঠেছে তাদের চেহারায়। তাদের কেউ জমিজমা বিক্রি করে আবার কেউ ঋণ করে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন। খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। স্বজনদের কাছে ফিরে যাচ্ছেন এক বুক হতাশা নিয়ে। কীভাবে সংসার চলবে, কীভাবেই বা ঋণের বোঝা দূর করবেন এই চিন্তায় নির্ঘুম প্রায় ফেরত আসা এসব প্রবাসীরা।

বিমানবন্দর প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক ও ব্রাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে সৌদি আরব থেকে ২০ হাজারেরও বেশি শ্রমিক ফেরত এসেছে। যাদের বেশির ভাগই আকামা থাকা সত্ত্বেও পুলিশ গ্রেপ্তার করে দেশে পাঠিয়ে দিয়েছে।

শেয়ার করুন!