বেশি দামে লবণ বিক্রয়ের জন্য ৩১ ব্যবসায়ীর কারাদণ্ড



সিএনবাংলাদেশ অনলাইন :

হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় জনমনে হতাশা না কাটতেই এবার লবণের দাম বৃদ্ধির গুজব ছড়িয়ে গেছে সারাদেশে, শহরতলী ও তার আশপাশের এলাকাগুলোতে এই গুজবকে পুঁজি করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। বিভিন্ন এলাকার মতো কেরানীগঞ্জেও এই গুজবের ওপর ভর করে অতিরিক্ত লবণ মজুদ রাখার উদ্দেশে ক্রয় ও বিক্রির মাধ্যমে অধিক অর্থ আদায় করছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা।

সারা দেশের ন্যায় কেরানীগঞ্জ উপজেলায় এই গুজব ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে গোপন খবরের ভিত্তিতে উপজেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা ও কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশের সহযোগিতায় সকল হটবাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা হরা হয়। এ সময় ৩১ ব্যবসায়ীকে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড প্রদান করেন।

গতকাল মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বিকেল ৪ থেকে শুরু হয়ে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) অমিত দেবনাথ এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটর ম্যাজিস্ট্রেট মো. কামরুল হাসান সোহেল।

এ ব্যাপারে অমিত দেবনাথ বলেন, উপজেলায় গুজব রটে লবণের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ খবরের ভিত্তিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা এলাকায় বিভিন্ন হাট-বাজার ও মুদি ব্যবসায়ী বিপুল পরিমাণ লবণ গুদামজাত ও অধিক অর্থে বিক্রি করার অপরাধে ১৮ লবণ ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৪ জন অসাধু ব্যবসায়ীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয় বাকী চারজনকে অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।

কারাদণ্ড প্রাপ্তরা হচ্ছেন- মো. ইসমাইল, মো. ইমরান, মো. মুরাদ, মো. সালাম, মো. জামাল, মো. নাদিম, মো. কুতুব উদ্দিন, মো. বাচ্চু, মো. কামাল, মো. জাহাঙ্গীর, মো. লাঁল চাঁন মো. সম্রাট মিয়া, মো. হাবিব, মো. আসলাম।

অর্থদণ্ড প্রাপ্তরা হচ্ছেন- মো. রাকিব, মো. কাউসার, মো. মমিন ও মো. গুলজার হোসেন।

অপরদিকে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার বিভিন্ন বাজার এলাকায় ও মুদি দোকানে অভিযান পরিচালনা করে ১৩ জনকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হচ্ছেন- জিনজিরা আমিরাবাগ এলাকার মাশরাফি এন্টারপ্রইজ থেকে মো. ইলিয়াস ও মো. কুদ্দুস, জিনজিরা বাজার সাইদ স্টোর থেকে মো. মাসুদ, মডেল টাউন এলাকার মুদি ব্যবসায়ী আব্দুল্লা স্টোরের মালিক মো. শরিফ, আটিবাজার ভাই ভাই স্টোর থেকে মো. সাহিদ, তাহের স্টোর থেকে আব্দুল মোতালেব, কালিন্দী ইউনিয়নের নেকরোজবাগ এলাকার আখি ব্রাইটিস স্টোর থেকে মো. জহুরুল ইসলাম, ব্রম্মণকিত্তা এলাকার নুর আলম স্টোর থেকে মো. নুর আলম, মনু ব্যাপারীর ঢাল এলাকার আবির স্টোর থেকে মো. মাসুদ, শাক্তা ইউনিয়নের মালঞ্চ এলাকার আব্দুল্লাহ স্টোর থেকে মো. রানা, রোহিতপুর এলাকা থেকে মো. ইমান আলী, মো. মোস্তাফা ও মো. মজিবর। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রত্যেক অসাধু ব্যবসায়ীকে নগদ তিন হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করে।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত দেবনাথ আরো বলেন, ওইসব দোকানিরা লবণ মজুদ করে দেশের মধ্যে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছিল। ফলে ভোক্তা অধিকার আইনের ২০৯ এর ৪০ ধারা লঙ্ঘনের অপরাধে তাদের মধ্য থেকে ১৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং ১৮ জনকে জরিমানা প্রদান করা হয়েছে।

এছাড়াও সকল অসাধু ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি প্রদান করে বলেন, অহেতুক কোনো অসাধু ব্যবসায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি করার চেষ্টা করবেন না। বর্তমানে বাজার মনিটরিংয়ে জেলা প্রশাসনের পাশাপশি র‌্যাব-পুলিশ মাঠে রয়েছে। এরপর ধরা পড়লে নির্ঘাত জেল। কোনো ছাড় নাই। আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।

শেয়ার করুন!