সিলেটে সরকারদলীয় নেতাদের নিয়ে পুলিশের ছিনতাই নাটক!



ছবি-সংগৃহীত।

নিজস্ব প্রতিবেদক :

সিলেটে সরকারদলীয় নেতাদের নিয়ে পুলিশ ছিনতাই নাটক সাজিয়ে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণের পর জনমনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। জজমিয়া নাটক সাজিয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশ তাকে ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত মর্মে হয়রানী করার উদ্দেশ্যে তথ্য গোপন রেখে থানায় একটি ছিনতাই মামলা রুজু করে। এমনকি পুলিশ নিজেদের স্বার্থ লুঠতে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রেফতার নাটক তৈরি করে নিজেরাই একটি প্রেস রিলিজ (সংবাদ) প্রকাশ করিয়েছে বলেও অভিযোগ উটেছে। ন্যাক্কারজনক এই ঘটনায় সিলেটের জনমনে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। ষড়যন্ত্রমুলক মিথ্যা মামলায় দু’জনকে ফাঁসানোর পর অনেকের মধ্যে এখন গ্রেফতার আতংক বিরাজ করছে। কোতোয়ালি থানা পুলিশের এহেন কর্মকান্ডে সিলেটের অনেক শীর্ষ স্থানীয় সরকারদলীয় নেতাকর্মীরাও বেকায়দায়।

জানা গেছে, গত মাসের ( ১৮ মে ) দুপুরে সিলেট নগরীর নয়াসড়ক এলাকায় জনৈক এক মহিলার টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় সিসিটিভি ফুুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। কিন্তু রহস্যজনক হলেও সত্য যে, পুলিশ সিসিটিভি ফুুটেজ সঠিক যাচাই বাচাই না করে ছাত্রলীগ নেতা সরোয়া ও রাজনৈতিক অঙ্গনের পরিচিত তার এক বড় ভাই জয়নাল আবেদিন ডায়মন্ডকে জড়িয়ে ওই ছিনতাই মামলাটি দায়ের করে। পরবর্তীতে সেই ঘটনাকে ভিন্নখাতে নিতে দ্রুততার সহীত আদালতে মামলা দাখিল ও আসামি চালান দিয়ে রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। তারা নিজেও জানতো না যেখানে সিসিটিভি ফুটেজ হাতে রয়েছে সেখানে রিমান্ড আবেদন’র গুরুত্ব কতটুকু? এতে স্পষ্ট বুঝা যায়, কোন প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় থেকে প্রভাবিত হয়ে পুলিশ এই নারকিয় তান্ডবের জন্ম দিয়েছে। ছিনতাইয়ের ঘটনায় ব্যবহ্নত মোটরসাইকেল নিয়েও রয়েছে আজব গুজব তেলেশমাতি।

”সারোয়ার হলেন ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ও একজন ব্যবসায়ী। সে দক্ষিণ সুরমা ছাত্রলীগের সহসভাপতি এবং জেলা ছাত্রলীগ নেতা। একইভাবে ডায়মন্ডও হলেন সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতা।”

খুজ নিয়ে আরো জানা যায়, ‘ছিনতাইয়ের সময় নগরীর টিলাগড় এলাকার শাপলাবাগ’স্থ সরোয়ার তার একজন বন্ধুর বাসায় ( ১৮ মে ) তারিখে ঘুমিয়ে ছিলেন। আগেরদিন (১৭ মে) রাত ১১টা ৪৪মিনিটে সরোয়ার ওই বাসায় প্রবেশ করেন এবং পরদিন (১৮ মে) বিকেল ৪টা ৫৪মিনিটে সেখান থেকে বের হন। এরকম আরো একটি সিসিটিভি ফুটেজ ধারণ করা রয়েছে ওই বাসার মালিক কতৃপক্ষের নিকট। এতকিছুকে উপেক্ষা না করে অতি উৎসাহি হয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশ মামলা টুকিয়ে দেয়।’

‘‘এদিকে একটি সংশ্লিষ্ট সূত্র প্রতিবেদক’কে জানিয়েছে কোতোয়ালি থানায় ঘটনারদিন ঘটনাস্থল একজন আওয়ামী লীগ নেতা ও কাউন্সিলর ঘটনার সংবাদ পেয়ে উপস্তিত হন। তিনি তখন এর বিরোধিতা করেন কিন্তু রহস্যজনক কারনে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিম তার কথায় কোনও কর্ণপাত করেন নি। বরং ওসি নিজেই তার সাথে অসৌজন্যমুলক আচরন করেন। তবে লক্ষনীয বিষয় হলো পুলিশ পুরো ঘটনাকে ভিন্নখাতে নিতে সরোয়ারকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চাউড় করে দেন। অথচ সেইদিন রাতে সরোয়ার নিজে একটি মোটরসাইকেল নিয়ে থানায় হাজির হন বড় ভাই জয়নাল আবেদিন ডায়মন্ডকে দেখতে। তার সেই ব্যবহ্নত মোটরসাইকেল সহ সাথে থাকা মোবাইল ফোন ও টাকাকড়ি পুলিশ হাতিয়ে নিয়ে মামলা রুজু করে ফেলে। যদি ওই রাতের কোতোয়ালি থানায় থাকা সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয় তাহলে এসকল আলামতের কেয়ামত বের হবে সহজেই।’’

অপরদিকে সরেজমিন খুজ নিয়ে দেখা গেছে, অতি স্বচ্ছল পরিবারে গড়ে উটা সরোয়ার গত মাসের (১৯ মে) জিন্দাবাজার’স্থ এক্সিম ব্যাংকের শাখা থেকে নিজ স্বাক্ষরিত একটি চেকের পাতা দিয়ে দুই লক্ষ টাকা উত্তোলন করেন। এর কিছু টাকা করোনাভাইরাসের সময় অসহায় গরীব দুস্থদের মাঝে বিলিয়েও দেন। যেকোন সময় তিনি স্থানীয় এলাকায় থাকা অসহায় গরীবদের সাহায্য সহযোগীতা করতেন। এরকম একজন সৎনিষ্টাবান ব্যক্তিকে নিয়ে বিদ্রুপ বা পুলিশি নাটক সাজানো নজিরবিহীন স্থাপন ছাড়া কিছুই নয়। একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে কোন ব্যক্তির বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়ার অধিকার কারো নেই! যদিও ইতিমধ্যে এঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সরোয়ারের ‘মা’ হোসনা বেগম  একটি সংবাদ সম্মেলনও করেছেন।

এবিষয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে প্রতিবেদক’কে হোসনা বেগম বলেন, আত্মসম্মানবোধ সকলেরই রয়েছে। এসময় তিনি ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করেন এবং অবিলম্বে এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে পুলিশের উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

শেয়ার করুন!