
নিজস্ব প্রতিবেদক :
সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত রক্ষায় আইনশৃংখলা বাহিনীর গাফলতির কারনেই বিএসএফ’র গুলিতে অকালেই প্রাণ গেল সালমান আহমদের। এনিয়ে এর আগে ১৫ নভেম্বর “চোরাকারবারীদের কবলে সিলেটের কানাইঘাট থানা পুলিশ” শিরোনামের একটি সংবাদ সিএনবাংলাদেশ অনলাইন নিউজ পোর্টাল পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও রহস্যজনক কারনে টনক নড়েনি প্রশাসনের। অবশেষে তাদের গাফলতির কারনেই প্রাণ হারাতে হল সালমানকে।
কানাইঘাট উপজেলার আওতাধিন রয়েছে তিনটি সীমান্ত এলাকা। সীমান্তগুলো হল সুরইঘাট, ডোনা ও মুলাগুল। এ সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশে প্রবেশ করছে হরেক রকম মাদক,অস্ত্র,গরু,মহিষ,বিভিন্ন ধরণের পণ্য।
এনিয়ে গত মাসের ১৫ নভেম্বর একটি অনূসন্ধ্যানী প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় ‘সিএনবাংলাদেশ অনলাইন নিউজ পোর্টাল পত্রিকায়।’ অথচ প্রশাসন কোন কাজের কাজ করতে পারেনি। আজও চলছে সেই সীমান্ত দিয়ে রমরমা ভারতীয় পণ্যের আদান প্রধান। অবৈধ পথে অনুপ্রবেশ করছে কোটি কোটি টাকার নিষিদ্ধকৃত দ্রব্যসামগ্রী। ইদানিং সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন বাজার হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছে সড়কের বাজার ও ছাগলি বাজার। পাশাপাশি বেঁচে নেওয়া হয়েছে কারাবাল্লা এলাকার কারাবাল্লা মসজিদ রাস্তাও। বর্ডার দিয়ে অনায়াসে পাচার হওয়া পণ্য এসকল এলাকার বিভিন্ন পথ ব্যবহার করছে চোরাকারবারি সিন্ডিকেট গোষ্টি। প্রকাশ্যে দিবালোকে এই দু’টি সিন্ডিকেটের বাজার থেকে ভারতীয় পণ্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পরিবহণযোগে প্রেরণ করা হচ্ছে।
এদিকে অভিযোগ রয়েছে, কানাইঘাট থানা পুলিশের সাবেক ওসি আব্দুল আহাদের বিরুদ্ধেও। তার আমলেই ওই সীমান্তবর্তী এলাকায় গড়ে উটে পাহাড়সম সিন্ডিকেট চোরাকারবারি। প্রতি সপ্তাহ থেকে শুরু করে মাসিক চাঁদা আদায় করতেন তিনি। এবং সীমান্ত এলাকার কতিপয় অসাধু বাংলাদেশ বর্ডারগার্ড (বিজিবি) সদস্যের সাথেও ছিল তার গভীর সখ্যতা। সেই সুবাধে তিনি অল্প দিনে হাতিয়ে নিয়েছেন কাড়ি কাড়ি টাকা। তার হাতের পুতুল হয়েছিলেন একাধিক হলুদ চাঁদাবাজ সংবাদকর্মীও। অতি কৌশলে চোরাকারবারীদের পকেটবুক হয়ে চাঁদা আদায় বাণিজ্য করে অবশেষে বদলি নেন তিনি। বদলি হওয়ার পরেও সেই কুকর্মের আলামত প্রকাশ পায় জনসম্মূখে। আর তা প্রকাশ করে তার হাতে গড়া কতিপয় অসাধু কর্তা ব্যক্তি।
খুঁজ নিয়ে জানা যায়, তলেপিটে একযোগে কাজ করছে কানাইঘাটরে বাংলাদেশ বর্ডারগার্ড (বিজিবি) ও পুলিশ। তাদের উপজেলার আওয়াতাধিন সীমান্ত এলাকা প্রায় ওপেন সিক্রেট হিসেবে ব্যবহ্নত হচ্ছে। আর চোরাকারবারীদের প্রতিহতের দায়ভার নিতে তারা কেউ রাজি নয়। এতে চোরাকারবারীদের কবলে পড়ে গুড়পাক খাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন। অথচ তার খেশারত দিতে হচ্ছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারকে। কারন বিএসএফ’র গুলিতে যখন কোন বাংলাদেশি নাগরীক প্রাণ হারাণ ঠিক তখনই সরকারকে বিষয়টি ভাবিয়ে তুলে। তখন জনসম্মূখে ভাবমূর্তী ক্ষুন্ন হয় বাংলাদেশ সরকারের। এতকিছু বুঝারপরেও স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন চোরাকারবারীদের স্থান করে দিচ্ছে অবৈধ বাণিজ্যের। এজন্য গত বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ডোনা সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফের গুলিতে সালমান আহমদ (১৮) নামের এক তরুণ যুবক প্রাণ হারান। পরদিন শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘটনার খবর পেয়ে কানাইঘাট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে নিহতের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে। কিন্তু এ ঘটনার দায়ভার কেউ নিতে রাজি নয় এমনকি প্রশাসনও না! এভাবেই চলছে দায়ভার সাড়া অবস্থায় কানাইঘাটের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর আলামত।