
সিএনবাংলাদেশ অনলাইন :
২০১২-১৩ অর্থ বছরে জনতা ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের ৭টি অডিট আপত্তিতে মোট ১ হাজার ২৮২ কোটি ৪ লাখ ২২ হাজার টাকা তসরুপের ঘটনা ধরা পড়েছে । আজ রবিবার জাতীয় সংসদের সরকারী হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ১৯তম বৈঠক সূত্রে এ তসরুপের ঘটনা জানা গেছে।
জাতীয় সংসদে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কমিটির সভাপতি মোঃ রুস্তম আলী ফরাজী-এর সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য আব্দুস শহীদ, জহিরুল হক ভূঞা মোহন, মনজুর হোসেন, আহসানুল ইসলাম (টিটু), মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, ওয়াসিকা আয়েশা খান ও জাহিদুর রহমান বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠকে বাণিজ্যিক অডিট অধিদপ্তর কর্তৃক প্রণীত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, জনতা ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিঃ এর ২০১২-১৩ অর্থ বছরের হিসাব সম্পর্কিত বাংলাদেশের কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেলের বার্ষিক অডিট রিপোর্ট ২০১৩-১৪এ অন্তর্ভুক্ত ৭টি অডিট আপত্তিতে এ অনিয়ম ধরা পড়ে যা দ্রুত নিষ্পত্তি ও দোষিদের শাস্তির সুপারিশ করে কমিটি।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, এ তিনটি ব্যাংক সুদ মওকুফ মঞ্জুরী পত্রের শর্ত মোতাবেক ঋণ গ্রহীতা নির্ধারিত কিস্তির টাকা সময়মত পরিশোধ না করায় মোট অনাদায়ী কোটি ১০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা মন্দ ঋণে শ্রেণীকৃত করা, এলসির বিপরীতে আমদানিকৃত পণ্যের মূল্য পরিশোধের জন্য মঞ্জুরীকৃত ৪টি এলটিআর ঋণের টাকা মেয়াদোত্তীর্ণ অনাদায়ী এবং আর্থিক ক্ষতি ৯৮ কোটি ৭২লাখ কোটি ৭৮হাজার টাকা, মঞ্জুরীকৃত ২টি এলটিআর ঋণের অর্থ পরিশোধে অনীহার কারণে মেয়াদোত্তীর্ণ ও অনাদায়ী ১ হাজার ১২৪ কোটি ৪৭ লাখ ৬৩ হাজার টাকা, ব্যাংকের সহায়তায় ভূয়া প্লেজন্টের মাধ্যমে গ্রাহক দারা অর্থ আত্মসাৎ এবং গ্রাহককে অতিরিক্ত ড্রয়িং সুবিধা দেয়ায় সর্বমোট ১৭ কোটি ৪১ লাখ ১৮হাজার টাকা আদায় অনিশ্চিত, অতিরিক্ত ড্রয়িং সুবিধা দেয়ায় প্লেজ ঘাটতিজনিত অর্থ অপরিশোধিত থাকায় এবং রপ্তানীকৃত হিমায়িত চিংড়ি গুণগত মানসম্পন্ন না হওয়ার প্রেক্ষিতে বিদেশ হতে ফেরত আসায় বিলমূল্যের অর্থসহ সর্বমোট ১৪ কোটি ৬৩ লাখ ৬১ হাজার টাকা আদায় অনিশ্চিত, এলসির মাধ্যমে বিদেশ থেকে বিভিন্ন দ্রব্যের আমদানীর লক্ষ্যে সহায়ক জামানত গ্রহণ ব্যতিরেকে দেয়া ডিমান্ড লোন শর্ত মোতাবেক আদায় না করায় মেয়াদোত্তীর্ণ ১২ কোটি ৪৮ লাখ ৫৬ হাজার টাকা বেড এন্ড লস-এ পরিণত হওয়ায় ক্ষতি, ব্যাক টু ব্যাক রপ্তানি কার্যক্রম না হওয়া সত্বেও আই বি পি খাতে বেনিফিশিয়ারী হতে ক্রয়কৃত বিলের পরিশোধিত অর্থ গ্রাহক হতে আদায় করতে না পারায় ব্যাংকের ক্ষতি ৬ কোটি ১৯ লাখ ৭৩ হাজার টাকা তসরুপ হয়েছে। বৈঠকে এসব বিষয়ে সাক্ষ্য গ্রহণ, প্রশ্ন উত্তর ও জেরা পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে একটি আপত্তি নিষ্পত্তি, সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রসমূহে অনিয়মের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ ও অনাদায়ী অর্থ আদায়ের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়।
এসময় বৈঠকে কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ ও বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।