
জাহিদুল কবীর মিল্টন, যশোর প্রতিনিধি :
প্রায় এক মাস আগে নিখোঁজ কলেজ ছাত্র পল্লবের (২০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে । গত শনিবার (৯ নভেম্বর) রাতে পুলিশ পল্লবের দুই বন্ধুকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে যশোর সদর উপজেলার জঙ্গলবাঁধাল গ্রামের একটি কাঁচা ঘরের মধ্য থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পল্লব সদর উপজেলার বসুন্দিয়া ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের বিকাশের ছেলে। এঘটনায় কোতয়ালি থানায় একটি মামলা হয়। পুলিশ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত অভিযোগে দুইজনকে আটক করে।
আটককৃতরা হচ্ছে সদর উপজেলার জঙ্গলবাধাল গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে আলিফ আহমেদ অপূর্ব (২০) জগন্নাথপুর গ্রামের ফারুকের ছেলে মারুফ ওরফে ইশান (১৯), জঙ্গলবাধাল গ্রামের আজিজুর রহমানের স্ত্রী সাদিয়া সুলতানা (৫১)।
যশোর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ তাসমীম আলম জানিয়েছেন, গত ১৪ অক্টোবর নিখোঁজ হন কলেজ ছাত্র পল্লব। জঙ্গলবাঁধাল গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে আলিফ আহমেদ অপূর্ব সাথে সকালে বাড়ি থেকে বের হয়। নিহত পল্লব যশোর সরকারি সিটি কলেজের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী। এই ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় একটি জিডি করা হয়েছিল।
সেই জিডির সূত্র ধরে শনিবার সকালের দিকে পল্লবের দুই বন্ধু জঙ্গলবাঁধাল গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে অপূর্ব ও জগন্নাথপুর গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে ঈশানকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদ করে বসুন্দিয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই সঞ্জিব কুমার মন্ডল।
জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে অপূর্ব স্বীকার করে, পল্লবকে হত্যা করে তার নানা আজিজার রহমান মাস্টারের জঙ্গলবাঁধালের গ্রামের বাড়ির দক্ষিণ পাশের একটি কাঁচা ঘরের মধ্যে গর্ত খুঁড়ে সেখানেই পুঁতে রাখা হয়েছে।
আটককৃতদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক সার্কেল গোলাম রাব্বানি, কোতোয়ালি থানায় ওসি মনিরুজ্জামানসহ উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা সেখানে যেয়ে ঘরের মধ্যে মাটি খুঁড়ে পল্লবের মরদেহ উদ্ধার করেন। এই ঘটনায় সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে অপূর্ব ও ঈশানকে আটক করা হয়েছে। আর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অপূর্বের নানা আজিজুর রহমান মাস্টার ও নানী সাবিহা খাতুনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। এই হত্যা সম্পর্কে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এঘটনায় নিহত পল্লবের পিতা বিকাশ চন্দ্র দত্ত কোতয়ালি থানায় ১০ নভেম্বর রাতে মামলা করেন। মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত নামা আরো ২/৩ জনকে আসামি করা হয়।
নিহত পল্লবের পিতা মামলায় উল্লেখ করেন, আলিফ আহমেদ অপূর্বর বাড়ি মাঝে মাঝে ফাঁকা থাকায় মারুফ ওরফে ইশান তার বান্ধবী মুক্তাকে নিয়ে যেত। আলিফ আহমেদ অপূর্বর সাথে অথৈই নামে এক মেয়ের সম্পর্ক ছিলো। এসব ঘটনা আসামিদের পরিবারকে জানিয়ে দেয়ার কারণে ইশান ও অপূর্ব ক্ষুব্ধ হয়ে পল্লবকে খুন করে বলে তারা পুলিশের কাছে স্বীকারে করেছে।