দেশে করোনা প্রতিরোধে ‘মরার উপর খড়ার গা!’



অরুন সরকার  ।।

যে দেশে খাদ্য,বস্ত্র ও বাসস্থানের নিশ্চিয়তা প্রদান করা যাচ্ছেনা সেই দেশে লকডাউন নামক কাল শব্দটি ব্যবহার বা কারফিউ জারি করা কি অতীব জরুরী? সত্যিকার অর্থে সময় বলে দিবে কি করা প্রয়োজন। এমনিতেই নিম্ন আয়ের মানুষের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে এখন দেশের পুলিশ ও সহযোগী প্রশাসনের কতিপয় কর্তাব্যক্তি । এতে করে যেনো হিতে-বিপরীত না হয়। কারন এই বাঙালি জাতি পারেনা এমন কোন বিষয় নেই। এদেরকে দমিয়ে রাখা বড়ই কঠিন। নতুবা তারা নিঃস্বার্থ প্রাণ ঝড়াতেও রাজি। প্রায় মাসখানিক সময় অতিবাহিত হয়ে গেলো করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় প্রস্তুতি নেওয়ার। কিন্তু কাজের কাজ কি হয়েছে । করোনা নামক এই ভাইরাস ঠেকাতে আমরা কি সম্ভব হয়েছি ? বহিরাগত প্রভাবশালী দেশের এতো হাল হকিকত দেখার পরেও আমরা কেন প্রস্তুতি নিতে বিলম্ব করলাম। এর দায়ভার কার? এখন আবার চিন্তা করতেছি ‘হাজম সন্তানকে বাপ ডাকানোর।’ এটা কি আদৌ এই স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশে সম্ভব?

‘‘তবে হ্যা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কণ্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা যে, হাল ছাড়ার নেত্রী নয় তা ইতিমধ্যেই তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন। রাষ্ট্রের জনগণের স্বার্থে ও করোনা মোকাবেলায় বিভিন্ন ধরণের পদক্ষেপ ও দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করে যাচ্ছেন উচ্চ পর্যায়ের প্রশাসন তথা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের সঙ্গে। বিষয়টি নিয়ে শেয়ার করছেন বিভিন্ন দলীয় নেতাকর্মীদের সাথেও। কিভাবে এটার মোকাবেলা করা যায় আলোচনা করছেন শীর্ষ পর্যায়ের দেশি-বিদেশি বিশেষঞ্জদের নিয়ে। দেশের জনগণকে রক্ষা করতে তিনি সময়ের ব্যবধানে কঠোর পদক্ষেপ হাতেও নিয়েছেন। কিন্তু সেই পদক্ষেপকে ভাসিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনায় মেতে উটেছে প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্তারা। তারা গরিব অসহায় নিরীহ আমজনতাদের সচেতনতামূলক বক্তব্য বা দিকনির্দেশনা না দিয়ে উল্টো প্রহার করছে রাস্তা-ঘাটে। নির্বিচারে তাদের উপর নির্যাতন লাটিপেঠাসহ ষ্টীম রোলার চালিয়ে দিচ্ছে অনায়াসে। আজ জাতির বিবেক’কে তাক লাগিয়ে দিয়েছে তারা। মমতাময়ি ‌‌’মা’ খ্যাত দেশনেত্রী শেখ হাসিনাও এই নির্বোধদের আচরণ মেনে নিতে পারবেন কি না এনিয়েও রয়েছে সংকুচ।’’

”এমন একটা সময় এ দেশের জনগণ পারি দিচ্ছে যা বলতেও পারছেনা সইতেও পারছেনা। ঠিক তেমনি সরকারও বেকায়দায়। অন্তিম লগ্নে করোনা ভাইরাসের নিকঠ বিশ্ব সহ গোঠা দেশের জনগণ আজ জিম্মি। ঠিক সেইমূহুর্তে আবার ‘মরার উপর খড়ার গা।”

প্রভাবশালী ক্ষমতাধর চীন, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যে, স্পেন, সৌদি আরব, ভারত সহ অসংখ্য দেশ আজ করোনায় আক্রান্ত হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর লাশ গুনছে। কিন্তু তাদের তুলনায় বাংলাদেশে এসব কিছ্ইু নয় বললে চলে। শুধুমাত্র প্রয়োজন সচেতনতার। আর সেই সচেতনতাই পারে একমাত্র করোনা ভাইরাস থেকে আমাদেরকে রক্ষা করতে। এতে কাউকে প্রহার বা লাটিপেঠার কোন প্রশ্নই আসে না।

‘মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাবস ব্যবহার ও ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধোয়া/ধৌত করলে সহজেই এই ভাইরাস থেকে মুক্তি লাভ করা সম্ভব। এছাড়া বাড়ি-ঘর নিয়মিত পরিস্কার রাখা, বাইরে থেকে গিয়ে জুতা ঘরের বাইরে রাখা, জীবানুনাশক স্প্রে করা হলে করোনা ভাইরাস দূর করা যায়। এতে ভয় পাওয়ারও কিছু নেই। তবে আশপাশে কোন প্রবাসী থাকলে তাৎক্ষণিখ তার সংস্পর্শে না যাওয়াটাই ভাল। তাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা সবার জন্য নিরাপদ। সর্বনিম্নে সেই প্রবাসীকে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। এই শর্তগুলো মেনে চললে করোনা ভাইরাস কখনো ছড়াতে পারবে না।
যদিও এনিয়ে জনস্বার্থে দেশি-বিদেশি প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও অনলাইন গণমাধ্যমে নিয়মিত সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। এতোকিছুর পরেও ঠেকানো যাচ্ছেনা প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস। যার শুরুটা হয়েছে চীন রাষ্ট্র থেকে। আজ প্রায় বর্হিবিশ্বের দেড়শতাধিক বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এ ভাইরাস। চারদিকে শুধু লাশ আর লাশ। গণকবরে শায়িত সেইসব আক্রান্তে মারা যাওয়া ব্যক্তিরা।

”এদিকে বাংলাদেশ সরকার করোনা ভাইরাস থেকে জনগণকে রক্ষা করতে সারাদেশে গণপরিবহণ, দোকানপাট রেস্তোরা বন্ধ ঘোষনা দিয়েছেন । কেউ অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বাহির না হওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন। এবং পুলিশ প্রশাসন, সেনাবাহিনীসহ সহযোগী প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মাঠে কাজ করার অনুমতি প্রদান করেছেন। অথচ সেই প্রশাসনের লোকেরা নিজের মরণের কথা না ভেবে রাস্তা-ঘাট, পাড়া-মহল্লায়, গ্রাম-গঞ্জে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এরমধ্যে প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা অসহায় নিরীহ লোকদের উপর ষ্টিম রোলার চালাচ্ছে। এতে সরকার ও রাষ্ট্রের ভাবমুর্তী ক্ষুন্ন হচ্ছে। করোনা ভাইরাস দূর করতে গিয়ে তারা নিজেরাই নির্যাতনকারী ভাইরাসে পরিণত হয়েছে। একদিকে নির্যাতন করছে অন্যদিকে আবার ভিডিও ধারণ করছে। যা সম্পন্ন আইনি বিরোধি কার্য্যকলাপ। কারন কোন রাষ্ট্রের কোন নাগরীকের ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ করার অধিকার কারো নেই। এতে ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা করার অধিকার রাখেন সেই নাগরীক।”

”আঘাতকারী প্রশাসনের কর্তারা ভূলে গেছে কাউকে আঘাত দিয়ে নয় বরং আদর, সোহাগ ও ভালবাসা দিয়েই মানুষের মনকে জয় করতে পারলেই জীবণের লক্ষ্যে ও উদ্দ্যেশে পৌছা সম্ভব।”

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যেই বলেছেন যাদের ঘর-বাড়ি নেই তাদের খোঁজ-খবর নিয়ে বাসস্থান তৈরী করে দিতে। সেই মূহুর্তে আবার দেশে করোনা ভাইরাসের হানা। যে দেশে বাসস্থানের অভাব রয়েছে সেই দেশে খাদ্য বস্ত্রেরও অভাব নেই তা বলা বাহুল্ল। এটা চিরন্তন সত্য। তারপরেও শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি প্রায় সফলতার শেষ পর্য্যায়ে এখন। চৌকুস নেত্রী হিসেবে তার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে এই বাংলাদেশের মানচিত্রে। দেশে উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রেখে তিনি বিশ্বে তোলে ধরেছেন স্বাধীন বাংলাদেশের নাম। তার অক্লান্ত পরিশ্রমের কারনে বিশ্বের বুকে পরিচিত লাভ করেছে সোনার এ রোল মডেল বাংলাদেশ। তাই জনস্বার্থে তিনি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে তার ভূমিকাও থাকবে হয়তো অবিস্মরনীয় হয়ে। শেষ পর্য্যন্ত তার গৃহীত পদক্ষেপ বাঁচিয়ে দিতে পারে প্রায় ১৭-১৮কোটি মানুষকেও।’

বিশিষ্ট সাংবাদিক ও লেখক, অরুন সরকার ।।

শেয়ার করুন!